33 C
Dhaka
Thursday, September 19, 2024

মসজিদে মাইকিং করে লালন অনুসারী বৃদ্ধার ঘর ভাঙচুর

আধ্যাত্মিক সাধক লালন সাঁইজির অনুসারী মৃত গাজির উদ্দিন ফকিরের স্ত্রী চায়না বেগম চেয়েছিলেন জীবনের শেষ দিনগুলো স্বামীর কবরে মাথা ঠেকিয়ে কাটিয়ে দেবেন। ভিটেমাটিতে প্রতিদিন জ্বালাবেন সন্ধ্যা প্রদীপ। ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধার সেই ইচ্ছে পূরণ হয়নি। এলাকার মসজিদে মাইকিং করে ভেঙে দেয়া হয়েছে তার ঘর।

কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার টাকিমারা গ্রামে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, মাঠের মধ্যে স্বামীর কবরের পাশে স্থাপিত বৃদ্ধার ঘরটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। টিনের চালা ও বাঁশ-কাঠ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

শেষ বিকেলের আলোয় স্বামীর কবরের পাশে দাড়িয়ে চায়না বেগম বলেন, আমার স্বামী মৃত্যুর আগে বলে গেছেন, কোথাও জায়গা নাহলে তুমি আমার কবরের পাশেই থাকবা। প্রতিবছর বাতাসার সিন্নি হলেও করবা। তার কথা রাখতেই ঘরখানা তৈয়ার করি। কিন্তু এলাকার লোকজন আমাকে না জানিয়েই সব ভেঙে ফেলেছে।

আরও পড়ুনঃ  মায়ের পায়ের ধাক্কায় ভেসে ওঠে ফারুকের মরদেহ

ঘটনা জানতে পেরে প্রতিবাদ করে হামলার শিকারও হয়েছেন বৃদ্ধা। চায়না বেগমের দাবি, বাড়ি ভাঙার প্রতিবাদ করায় এলাকায় নতুন বাড়ি করা একজন লেবাসধারী হুজুর তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন চায়না বেগম। অভিযোগে ওই এলাকার সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য এনামুল হক, মাতব্বর মোশারফ হোসেন, আনার মণ্ডল ও সাইদুল হাজির নাম উল্লেখসহ ৪৫-৫০ জনকে আসামি করা হয়।

অভিযোগে বলা হয়, বুধবার (২৬ জুন) সকাল ৬টার দিকে অভিযুক্তরা তার বাড়িঘর ভাঙচুর করে অন্তত লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করেন। এমনকি রাতের আঁধারে সেখানে তাকে পেলে হত্যাও করা হবে বলে জানায়।

আরও পড়ুনঃ  কক্সবাজারে পাহাড়ধসে স্বামী ও অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর মৃত্যু, ৯৯৯-এ কল দিয়েও মেলেনি প্রতিকার

চায়না বেগমের বোন জামাই সাধু শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, আমাদের অপরাধটা কী? আমরা সাধু সমাজ কি নিজের জমিতেও আর থাকতে পারব না। আজকে সাধুর ঘর কেন ভাঙা হলো? সাধু সমাজকে কেন অপমান করা হলো?

শাহাবুদ্দিন সাবু বলেন, মসজিদে মাইকিং করে লোক জড়ো করে ঘর ভাঙা হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

এ বিষয়ে শুক্রবার বিকেল চারটায় কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মিটিং হয়। মিটিংয়ে উপস্থিত থাকা চায়না বেগমের ভাই আয়াত আলী বলেন, ওসি আমাদের বলেছেন আপাতত ওই জায়গায় ঘর করে থাকা যাবে না, অন্য যেকোনো জায়গায় থাকতে হবে। তবে এলাকাবাসী ঘর ভেঙে যে ক্ষতি করেছে সেই ক্ষতিপূরণ প্রশাসনের মাধ্যমে দেয়া হবে।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ