28 C
Dhaka
Friday, November 22, 2024

ছাত্রশিবির রগ কাটে এমন কোনো রেকর্ড নেই : রাবি সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখার সভাপতি আব্দুল মোহাইমিন বলেছেন, ছাত্রশিবির রগ কাটে এমন কোনো রেকর্ড নেই। কেউ কখনো প্রমাণ দিতে পারেনি। ছাত্রশিবিরকে আদর্শিকভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে আমাদের নামে নানা ধরনের অভিযোগ তুলেছে, বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অপবাদ দিয়েছে।

সোমবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে সক্রিয় রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনসমূহের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মতবিনিময় শেষে সিনেট ভবনের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

ছাত্রলীগের ভেতরে ছাত্রশিবিরের অনুপ্রবেশ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্রশিবিরের কনস্টিটিউশনে স্পষ্ট বলা আছে, কেউ যদি ছাত্রশিবিরে থাকা অবস্থায় অন্য কোনো মতাদর্শে বিশ্বাসী হয় তাহলে সে ছাত্রশিবিরের কর্মী হিসেবে আর থাকতে পারবে না। এটা ক্লিয়ার যে ছাত্রশিবিরের কোনো কর্মী অন্য কোনো সংগঠনের কর্মী হতে পারবে না।

আরও পড়ুনঃ  মার্চ ফর জাস্টিস: কার্জন হলের সামনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবস্থান

ছাত্রশিবিরের একজন কর্মীর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে শিবিরের এই নেতা বলেন, ছাত্রশিবিরের কর্মীদের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। তাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে হবে, কোরআন তিলাওয়াত করতে হবে, অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে পারবে না, ইসলামের বিধিবিধানগুলো পালন করবে, হারাম কাজে লিপ্ত হতে পারবে না।

রাবিতে শিবিরের হাতে ২৮ জন নিহত হওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করলে শিবির সভাপতি বলেন, ১৯৮৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত রাবিতে ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে ২৯ জন রাজনৈতিক ব্যক্তি, আর বাকিরা সাধারণ শিক্ষার্থী। যে ২৯ জন রাজনৈতিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন তার মধ্যে ১৬ জনই ছিল ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী। বাকিদের মধ্যে ছাত্রদলের তিনজন, ছাত্রলীগের সাতজন। আবার ছাত্রলীগের নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে মারা গেছে তিনজন। এভাবে বিভিন্ন জুলুম ও নির্যাতনের শিকার কিন্তু আমরাই হয়েছি।

আব্দুল মোহাইমিন বলেন, আমাদের ওপর যে ধরনের জুলুম ও নির্যাতন হয়েছে আমরা সেই ইতিহাস এখন আর নিয়ে আসছি না। আজকের সভায় রাজনৈতিক দল এসেছে ১৭-১৮টি। তার মধ্যে একমাত্র ছাত্রশিবিরের কর্মীদেরকেই ইতিপূর্বে প্রকাশ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের সঙ্গে যা ঘটেছে আমরা সব প্রমাণ দিতে পারব। তখনকার পত্রপত্রিকাগুলো পড়লেই আপনারা প্রমাণ পেয়ে যাবেন কীভাবে ঘটনাগুলো ঘটেছে। ছাত্রলীগ ক্ষমতায় এসে ক্যাম্পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল। ‌শহীদ নোমানী ভাই অন্যান্য হলগুলো থেকে আমাদের লোকদের উদ্ধার করতে গিয়েছিলেন। সেখানেই কর্মীদেরকে উদ্ধার করতে গিয়ে শরিফুজ্জামান নোমানী ভাই শহীদ হয়েছিলেন।

আরও পড়ুনঃ  সপরিবারে দেশ ছাড়লেন শামীম ওসমান

প্রকাশ্যে না এসে একে একে আত্মপ্রকাশ করার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা যে নিজেরা আত্মপ্রকাশ করেছি, এটা কোথাও দেখাতে পারবেন না। এটা সাংবাদিকরা করেছেন। এর আগে ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় আমাদের নামে নানা ধরনের মামলা হয়েছে। আগে ছাত্রশিবিরের নাম শুনলে তাকে ধরিয়ে দেওয়া, তার নামে মামলা দেওয়া ও সারা রাত ধরে নির্যাতন করা ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে জনগণও এটাকে জায়েজ মনে করে নিয়েছিল। সেই সময় ছাত্রশিবিরের পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। তারপরও ছাত্রশিবিরের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা তাদের কাজ চালিয়ে গেছে।

আরও পড়ুনঃ  প্রবাসীর স্ত্রীর খাটের নিচ থেকে ছাত্রলীগ নেতা আটক

ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীদের জোর করে পর্দা করানোর প্রশ্নে মোহাইমিন বলেন, ছাত্রশিবির এসব কাজ করেছে আপনারা দেখেছেন? আমি তো দেখেছি প্রক্টর এ কাজ করেছেন, সন্ধ্যার পর কাপল খুঁজে বেড়ায় প্রক্টর। আর যেই ধোঁয়াশাটা আছে, ছাত্রশিবির আদর্শগতভাবে এই কাজটা করতে পারে না। ছাত্রশিবির তাদের আদর্শ প্রকাশ করে। সেই আদর্শ প্রকাশের জায়গা থেকে যার ইচ্ছে আছে সে তা গ্রহণ করতে পারে। যার ভালো লাগবে না সে গ্রহণ করবে না। কাউকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া ছাত্রশিবিরের কাজ নয়।

এ সময় সংগঠনটির আরও চারজন নেতা উপস্থিত ছিলেন।

আপনার মতামত লিখুন:
সর্বশেষ সংবাদ
জনপ্রিয় সংবাদ